ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন :
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, ঢাকা খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসার প্রধান পরিচালক ও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের সভাপতি মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী এ মনীষী ছিলেন বিশিষ্ট আলিমে দ্বীন, তুখোড় বক্তা, শক্তিশালী লেখক, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও অভিজ্ঞ সংগঠক। ইসলামের সেবায় তিনি জীবন উৎসর্গ করেন। ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার ধুরুং গ্রামে তার জন্ম।
মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ১৯৭৪ সালে দারুল উলুম হাটহাজারী থেকে দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি অর্জন শেষে পটিয়া থানাধীন কৈয়গ্রাম মাদরাসা, বাবুনগর মাদরাসা ও ঢাকার আশরাফুল উলুম বড় কাটরা মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত শিক্ষাকার্যক্রম চলে আসছে। আমৃত্যু তিনি এই মাদরাসার মহাপরিচালক ও শায়খুল হাদিস হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি দারুল উলুম হাটহাজারীসহ অনেক মাদরাসা পরিচালনা কমিটির (মজলিসে শূরা) সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ এবং বিদেশে যুক্তরাজ্যসহ বহু স্থানে মসজিদ ও মাদরাসা স্থাপন করেন। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও আমেলার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশের খ্যাতনামা আলিম, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক বক্তা মরহুম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-এর সাথে তার ছিল গভীর রুহানি সম্পর্ক। দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করার পর মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী বহুদিন খতিবে আযমের সান্নিধ্যে অবস্থান করে শিক্ষা ও দীক্ষা হাসিল করেন। খতিবে আযমও মেধাবী ছাত্র হিসেবে তাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। ১৯৮০ সালে রাজধানীর ছোট কাটরা মসজিদ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে তিনি কাদিয়ানি মতবাদ খণ্ডনের ওপর তথ্যপূর্ণ এক দীর্ঘ আলোচনা করেন। সে বয়ানটিকে মাওলানা জিহাদী বাংলা ভাষায় নথিবদ্ধ করে ‘খাতেমুল মুরসালিন’ নামে পুস্তিকাকারে প্রকাশ করেন। মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-এর স্মৃতি, প্রজ্ঞা ও সজ্ঞা উল্লেখপূর্বক ‘তাজকিরায়ে খতিবে আযম’ নামে তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-এর স্মারকগ্রন্থের জন্য লিখিত এক নিবন্ধে মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, ‘হজরত খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-এর অবদান, কামালাত ও যোগ্যতাবলির সব কিছু তুলে ধরার দুঃসাহস করাও আমার মতো বাকশক্তি ও লেখনশক্তিহীনের জন্য পাপের নামান্তর। প্রভুপ্রদত্ত তার সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব ছিল হকপন্থীদের এক বিশেষ আশ্রয়স্থল। উম্মতের জন্য তিনি ছিলেন এক অসাধারণ নিয়ামত। তাই তো বলা হয়, ‘একজন প্রকৃত আলিমের মৃত্যু মানে পুরো পৃথিবীর মৃত্যু!’ হজরত খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-কে আল্লাহ পাক অনেক কামালাত তথা যোগ্যতা দান করেন। ছোটকাল থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী ও চরিত্রবান। তার ছাত্রজীবন ছিল অসাধারণ এক স্বর্ণালি জীবন। ছিলেন শিক্ষকদের দোয়া ও মুহাব্বতের পাত্র। শিক্ষকদের কথা ও নসিহতগুলো ধারনের ক্ষেত্রে তার অন্তর-মস্তিষ্ক ছিল টেপ রেকর্ডারের মতো।
শিক্ষকতা জীবনের পুরোটাই ছিলেন ছাত্র-শিষ্যদের চক্ষুর প্রশান্তি, জ্ঞানের আধার আর অনেক বিষয়ের উৎপত্তিস্থল! ওয়াজ-বক্তৃতায় ছিলেন খতিবে আযম তথা ‘সবচে বড় বক্তা’। রাজনীতির ময়দানে ছিলেন নেতাদের নেতা। লেনদেন ও আচার-ব্যবহারে ছিলেন অতুলনীয় সাদা মনের এক দিল খোলা মানুষ। ছিলেন হজরত মুফতি আযম আল্লামা ফয়জুল্লাহ রহ:-এর ইজাজতপ্রাপ্ত চার খান্দানেরই খলিফা। লেখার ক্ষেত্রেও ছিলেন অসাধারণ। চলাফেরায় ছিলেন লৌকিকতাবর্জিত। জানতেন সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ছোটর সাথে মেলামেশা করার অতুল্য পদ্ধতি। কোনো ধরনের দুশ্চিন্তাই তার মনোবল কখনো ভাঙতে পারেনি। গরিব ও অসুস্থের খোঁজখবর নিতেন। অহঙ্কার ও আমিত্ব থেকে ছিলেন বহু ঊর্ধ্বে। প্রতি স্তরের যোগ্যদের মূল্যায়ন করতেন। সাধারণ বক্তাদের বয়ানও খুব মনোযোগসহকারে শুনতেন এবং কখনো কখনো এরকম মামুলি বয়ান শুনেই চোখের পানি ছেড়ে দিতেন। প্রত্যেকের প্রশংসায় তার মুখ থাকত সদা সতেজ। পরনিন্দা-পরচর্চা থেকে বজায় রাখতেন যোজন যোজন দূরত্ব। কখনো পারিবারিক আলোচনা হলে স্ত্রী-সন্তানদেরও প্রশংসা করতেন। বড়-ছোট মাদরাসার বার্ষিক সভায় বেশির ভাগ সময়েই হুজুরের দাওয়াত থাকত। বয়ানের শুরুতেই তিনি মাদরাসা ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের পরিচয় তুলে ধরতেন। আর শ্রোতাদের সামনে মাদরাসার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরতেন খুব সুন্দর ও সাবলীলভাবে যাতে মাদরাসার সাথে এলাকার জনসাধারণের একটি আত্মিক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায়। আমন্ত্রিত আলোচকদের মধ্যে যাদের চিনতেন, তাদের যোগ্যতা ও পারঙ্গমতাকে খুব গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতেন এবং তাদের আলোচনা শোনার জন্য শ্রোতাদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। যখন যে বিষয়ে আলোচনা করতেন, সে বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রাঞ্জল ভাষায় বিশ্লেষণ করতেন। তার আলোচনা শুনে মনে হতো যেন, এ বিষয়ে আর কেউ আলোচনা করতে সক্ষম হবেন না। কুরআন কারিমের কোনো আয়াত তিলাওয়াত করে যখন তার তাফসিরের সাথে সামঞ্জস্য বুঝিয়ে দিতেন, তখন মনে হতো, হ্যাঁ, আয়াতের সঠিক তাফসির এটাই। ধর্মের অনেক জটিল মাসয়ালা সহজ করে বুঝিয়ে দিতেন ছোট ছোট পারিবারিক ঘটনার উদ্ধৃতি টেনে। কঠিন থেকে কঠিনতর বিষয়গুলোকে সবার বোধগম্য উদাহরণের মাধ্যমে অতি সহজ করে দিতেন। যখন সাহাবায়ে কেরাম রা:-এর যুদ্ধাভিযানের ঘটনা বর্ণনা করতেন তখন মনে হতো যেন তিনি সশরীরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আপন আলোচনাশক্তির জাদুবলে যুদ্ধক্ষেত্রের কর্মকাণ্ডকে শ্রোতাদের সামনে এমনভাবে তুলে ধরতেন যে, শ্রোতারাও মনে করত, তারা সব কিছু সচক্ষে দেখছেন। তিনি সব শ্রেণীর মানুষের যোগ্যতার স্বীকৃতি দিতেন। কখনো বা উপযুক্ত স্থানে তা বয়ানও করতেন। তার কথা ছিল খুবই স্পষ্ট। তার কুরআন তিলাওয়াত ছিল অত্যন্ত শুদ্ধ এবং খুবই হৃদয়গ্রাহী। আলোচনার জন্য যখন মঞ্চে আরোহণ করতেন, ডায়াস থেকে যখন তার নাম ঘোষণা করা হতো, সাথে সাথেই চার দিক থেকে পতঙ্গের মতো মানুষ ছুটে আসত এবং সবাই একাগ্রমনে তার বয়ান শোনার জন্য বসে যেত। খুতবা যখন শুরু করতেন, তখন শ্রোতাদের অবস্থা হয়ে যেত ‘তাদের মাথার ওপর পাখি’র মতো! বেশির ভাগ আলিম ও তালিবে ইলমই খাতা-কলম নিয়ে তার বয়ান নোট করে রাখত। আলোচনার আরম্ভ থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত সবাই শান্তভাবে বসে থাকতে ক্লান্তি অনুভব করত না। কারো অনুভবও হতো না যে, সময় কোন দিক দিয়ে শেষ হয়ে গেল! রাজনৈতিক মাঠে যখন ভাষণ দিতেন, তখন সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও পুঁজিবাদ-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এমন প্রজ্ঞার সাথে মানুষকে বোঝাতেন যে, যেভাবে উপস্থাপন করাটা সে কালেও কারো সাধ্যের সীমায় ছিল না। উল্লিখিত তিন মতবাদের বিপরীতে যখন কুরআন-হাদিসের আলোকে নিজের বিশেষ বক্তৃতাশৈলীর জাদুতে ইসলামী শরিয়ত ব্যবস্থার স্বরূপ তুলে ধরতেন, তখন সাধারণ মানুষের কাছে সবকিছু দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যেত। এ ছাড়াও সারা দেশে তিনি শিক্ষিতমহল ও সাধারণ মানুষের মাঝে বিভিন্ন ওয়াজ-নসিহত ও সভা-সমিতিতে, বয়ান-বক্তৃতায় সমান গ্রহণযোগ্যতা রাখতেন। রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বড় বড় জনসমাবেশে তিনি বক্তৃতা করতেন। তার বয়ানের ধরন ছিল বিস্ময়কর প্রভাবক ও চমৎকার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। হাদিসের ভাষ্যমতে, কিছু বয়ান জাদুময়ী আর কিছু বক্তৃতা সর্বৈব প্রজ্ঞাপূর্ণ’ (ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সম্পাদিত ‘খতিবে আযম স্মারকগ্রন্থ’)।
মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী চারটি ভাষা জানতেন : বাংলা, আরবি, ইংরেজি, উর্দু ও ফারসি। তার লেখার হাতও ছিল চমৎকার। উর্দু ভাষায় তার পারঙ্গমতা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। তিনি যে সময় পড়ালেখা করেন তখন শিক্ষার মাধ্যম ছিল উর্র্দু। ফলে উর্দু ভাষায় গদ্য ও পদ্য রচনায় তার ছিল সমান দক্ষতা। তিনি সাবলীল ভাষায় কবিতা রচনা করতে পারতেন। তার রচনাবলির মধ্যে রয়েছে আখলাকে রাসূল সা:, উজ্জ্বল নক্ষত্র, কাদিয়ানি ফিতনা, মুসলিম মিল্লাতের অবস্থান, কোরবানির আহকাম, গুলশানে নূর, আসমানি ইলম কি চার দরখসান্দে সিতারে, তাজকিরায়ে খতিবে আযম, শেখ সাদী রহ:-এর উপদেশ ভাণ্ডার, কাদিয়ানের বহুরূপী ভণ্ডনবী, নুকুশে জিন্দেগি ও পান্দে নামায়ে নছির, কওমি মাদরাসা : উদ্দেশ্য পদ্ধতি ফলাফল।
মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ছিলেন সংগ্রামী ও সাহসী আলিম। বাতিল ও না-হকের মোকাবেলায় সর্বদা ছিলেন সোচ্চার। সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য সবসময় তার প্রস্তুতি থাকত। কাদিয়ানিদের মুখোশ উন্মোচন ও তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের ব্যানারে তিনি সারা জীবন আন্দোলন করে গেছেন। এ বিষয়ে তিনি ঢাকায় বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। প্রায় প্রতি বছর ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত খতমে নবুয়ত সম্মেলনে অতিথি হিসেবে যুক্তিনির্ভর বক্তব্য রাখতেন। তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের অফিস থেকে হজরত মুহাম্মদ সা: শেষ নবী, তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবেন না; এ বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বহু পুস্তক বের করেন। বায়তুল মোকাররমের খতিব ও মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের সভাপতি মরহুম মাওলানা উবায়দুল হক রহ:-এর পরামর্শে এসব গ্রন্থ সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেন। কাদিয়ানিদের ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার ক্ষেত্রে তার অবদান ব্যাপক ও বিশাল।
ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন মুত্তাকি, পরহেজগার, অনাড়ম্বর, বিনয়ী ও বন্ধুবৎসল। এলোমেলো কথাকে গুছিয়ে বলার যোগ্যতা ছিল তার। আশি ও নব্বইয়ের দশকে বিদগ্ধ ওয়ায়েজ হিসেবে সারা দেশে ছিল তার পরিচিতি ও খ্যাতি। পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওয়াজ ও নসিহতের ময়দান থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। আমার সাথে তার ছিল মধুর ও আন্তরিক সম্পর্ক। আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। কলেজে শিক্ষকতা করার সময় জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা গেলে প্রায়ই তার মেহমান হতাম পুরানা পল্টনস্থ খতমে নবুয়ত অফিসে; একবার দু’বার নয়, বহুবার ও বহু বছর। অফিসের কেয়ারটেকার তাসলিম আমার সেবায় নিয়োজিত থাকতেন। এখন সেই অফিস নেই, মাওলানা জিহাদী নেই ও তাসলিমও নেই।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ:-এর ইন্তেকালের পর মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর যখন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব নির্বাচিত হন, তখন পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত ঘোলাটে। দায়িত্ব নিয়ে তিনি অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তা সামাল দিতে তাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহ:-এর ইন্তেকালে তিনি অসহায় বোধ করেন। হেফাজতের যেসব কেন্দ্রীয় নেতা কারাগারে আটক রয়েছেন তাদের মুক্তির জন্য অসুস্থ শরীর নিয়ে তাকে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত দৌড়াদৌড়ি ও পরিশ্রম করতে দেখা গেছে। অল্প দিনের ব্যবধানে চারজন প্রথম সারির নেতার ইন্তেকালে হেফাজতের সাংগঠনিক কাঠামোতে বড় ধাক্কা লাগে। এর মধ্যে রয়েছেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী (সভাপতি), আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (সভাপতি), আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (মহাসচিব) ও মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী (মহাসচিব)। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দারুল আরকামের প্রধান পরিচালক শায়খুল হাদিস আল্লামা সাজেদুর রহমান হাফি.। তিনি অত্যন্ত যোগ্য ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। ঠাণ্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন না। দেশজুড়ে রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। হেফাজতের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটা তার ওপর নির্ভরশীল।
বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত জানাজার নামাজে বিপুল মানুষের উপস্থিতি মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদীর গ্রহণযোগ্যতার পরিচয় মেলে। দোয়া করি, আল্লাহ তায়ালা তার সব খিদমত কবুল করুন, তার মাগফিরাত করুন, তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন এবং দারাজাত বুলন্দ করে দিন, আমিন।